ইবি প্রতিনিধি: ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) কর্মকর্তাদের ক্যাম্পাসের কর্মঘণ্টা কমানো, চাকরির বয়সসীমা বৃদ্ধি এবং বেতন স্কেল বাড়ানোর দাবিতে আন্দোলন অব্যাহত রয়েছে। কর্মবিরতি আন্দোলনে উপাচার্য সহ প্রশাসনকে গুরুতর হুমকিও দিয়েছে কর্মকর্তাদের একাংশ।
এ দিকে চাকরির বয়স বৃদ্ধি ও বেতন স্কেল এই দুটি দাবি মেনে নিয়ে সুনির্দিষ্ট নীতিমালা প্রণয়নের জন্য ৩ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
আলোচনায় বসা ছাড়াই ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তাদের দাবিসমূহ বাস্তবায়ন না হলে আগামীকাল উপাচার্য, উপ-উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষকে অফিসে ঢুকতে দেবেন না বলে হুমকি দিয়ে কর্মকর্তা সমিতির সাধারণ সম্পাদক মীর মোর্শেদুর রহমান বলেন, ‘আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে যদি আমাদের দাবি বাস্তবায়ন না হয় তাহলে এই গাছের নিচে আমরা আর বসে থাকব না, আমরা ওই প্রশাসন ভবনের নিচ তালায় বসে আন্দোলন করব, আপনাদের তিনজনকে অফিসে ঢুকতে দিব না। আমি আর আপনাদের সঙ্গে কোনো সাক্ষাতে যাব না।’
এছাড়াও কোনো কর্মকর্তা এ আন্দোলনে যোগদান না করলে হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেন, ‘যারা এই প্রশাসনের দালালি করবেন তারা কেউ অ্যাডিশনাল এবং কেউ ভারপ্রাপ্তও হতে পারবেন না। আপনাদের আমরা প্রয়োজনে ক্যাম্পাসে ঢুকতে দিব না।’
এ দিকে উপাচার্য ড. রাশিদ আসকারীসহ প্রশাসনকে হুমকি দেওয়ায় ফুঁসে উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীবৃন্দ।
জানা গেছে, মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে আন্দোলন অব্যাহত রেখেছে কর্মকর্তাবৃন্দ। এই ঘটনায় শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মচারী ও কর্মকর্তাদের একাংশের মধ্যে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, অ্যাকাডেমিক ও প্রশাসনিক গতিশীলতার জন্য গত বছরের ১৭ মে বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৩৪তম সিন্ডিকেটে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মঘণ্টা সকাল ৮টা থেকে দুপুর ২টার পরিবর্তে সকাল ৯টা থেকে বিকাল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত করা হয়। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের নীতিমালা অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তাদের চাকরির বয়সসীমা ৬২ থেকে ৬০ করা হয়। এরই প্রেক্ষিতে চলমান এই আন্দোলনে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ৩১ আগস্ট ২৪৬তম সিন্ডিকেট সভায় মানব সম্পদ ও ব্যবস্থাপনা বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. কাজী আখতার হোসেনকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠিত হয়েছে।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় কর্মকর্তা সমিতির মহাসচিব এবং ইবি কর্মকর্তা সমিতির সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আমি আর আপনাদের সঙ্গে কোনো সাক্ষাতে যাব না।’ এ সময় তার বিরুদ্ধে উপাচার্যকে প্রাণনাশের হুমকির যে অভিযোগ উঠছে তা তিনি নাকচ করে বলেন, ‘আমি জনগণের জন্য রাজনীতি করি, তবে এ কাজ করতে গিয়ে উপাচার্য কেন, তার চেয়ে শক্তিধর কাওকে হুমকি প্রদর্শন দেওয়া লাগলে দিব। উপাচার্য মহাদয় আপনি কথায় কথায় বলেন, চাকরি খেয়ে নিবেন। মনে রাখবেন আমাদের চাকরি গেলে আদালত আছে। আপনার চাকরি গেলে কোনো আদালত নাই। এই সমাবেশ থেকে আপনাকে পরিষ্কারভাবে বলতে চাই, একটা কর্মকর্তার ফাইলে যদি হাত দেন, বা ফাইল টানেন বা বদলি করেন তাহলে আপনার ফাইল কিন্তু সুষ্ঠু থাকবে না, বাংলাদেশ আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় কর্মকর্তা ফেডারেশনের পক্ষ থেকে আপনার ফাইলও টানা হবে। আপনার ফাইল টানলে কিন্তু আর ঠেকানোর ক্ষমতা থাকবে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘যারা এই প্রশাসনের দালালি করবেন, তারা কেউ অ্যাডিশনাল এবং কেউ ভারপ্রাপ্তও হতে পারবেন না। আপনাদের আমরা প্রয়োজনে ক্যাম্পাসে ঢুকতে দিব না। তারপর যা হয় হবে।’ এ সময় তিনি রেজিস্ট্রারকে জনতার কাতারে যোগ দেয়ার আহ্বান জানান।
আন্দোলনে কর্মকর্তারা উপাচার্যকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘আমাদের তিন দফা দাবি মেনে নিন। এটাই আপনার জন্যে মঙ্গলকর হবে। আপনি আমাদের অন্য জায়গায় যেতে বাধ্য করবেন না, এর পরিস্থিতি ভালো হবে না। আপনি প্রশাসনিক ভবন তো দূরের কথা আপনার বাঙলোতেও থাকতে পারবেন না। কর্মচারীদের নিয়ে ক্যাম্পাসের বাহিরে অফিস করতে হবে। অন্যথায় যে কোনো পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত থাকুন।’
এমন হুমকির প্রেক্ষিতে ফুঁসে উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তাদের একাংশ। তারা অভিযোগ করে বলেন, ‘এমন আচরণ অত্যন্ত অযৌক্তিক ও বেদনাদায়ক। থেমে থেমে চলমান এমন কর্মকাণ্ডে আমাদের অ্যাকাডেমিক ও প্রশাসনিক কাজে চরম ব্যাঘাত ঘটছে। এটির সুরহা হওয়া উচিত।’
কর্মকর্তা সমিতির সাধারণ সম্পাদক মীর মোর্শেদুর রহমান বলেন, ‘আমাদের তিন দফা দাবি যতদিন পর্যন্ত মেনে নেওয়া না হবে ততদিন আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব।’
প্রগতিশীল শিক্ষক সংগঠন শাপলা ফোরামের সাধারণ সম্পাদক মাহবুবর রহমান বলেন, ‘কর্মকর্তা সমিতির দাবি থাকতেই পারে, আন্দোলন করাও তাদের অধিকার আছে। তবে এর অর্থ লাগামহীন বক্তব্য নয়। ইবি পরিবারের সমাদৃত বর্তমান উপাচার্য মহোদয় সম্পর্কে অনভিপ্রেত বক্তব্য দুর্ভাগ্যজনক।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. রাশিদ আসকারী বলেন, ‘সরকারী নিয়মনীতিকে সমুন্নত রেখে যে কোনো যৌক্তিক দাবির প্রতি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আন্তরিক, তবে যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে ব্যবস্থা গৃহীত হবে। আমি প্রত্যাশা করি বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তাবৃন্দ আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকবে।’
Sweet blog! I found it while surfing around on Yahoo News. Do you have any suggestions on how to get listed in Yahoo News? I’ve been trying for a while but I never seem to get there! Appreciate it
Comments are closed.