নওগাঁর সাপাহার উপজেলায় মিশ্র ফলের বাগান করে কোটি টাকা আয়ের স্বপ্ন দেখছেন কৃষক সাখাওয়াত হাবিব। উপজেলা সদর থেকে চার কিলোমিটার দূরে শিরন্টি ইউনিয়নের ফুটকইল গ্রামে ৯৬ বিঘা জমিতে গড়ে তোলা হয়েছে বাগানটি। যেখানে দুই বছর আগে ১২ হাজার ৮০০টি আমের গাছ লাগানো হয়েছিল।
১০ মাস আগে সেই বাগানের আমগাছের সারির ফাঁকা জায়গায় বিভিন্ন জাতের ১১ হাজার ৭০০টি বরইগাছ লাগানো হয়। আমগাছগুলো থেকে গত বছরই ফলন পান। আর এবারই প্রথম বরইগাছগুলোতে বরই ধরেছে। প্রতিদিন ৭০ থেকে ৮০ মণের মতো বরই সংগ্রহ করা হচ্ছে। তার মিশ্র ফলের বাগানে কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয়েছে শতাধিক কৃষকের।
সাখাওয়াত হাবিবের গ্রামের বাড়ি জেলার পত্নীতলা উপজেলার শিহাড়া ইউনিয়নের গোবিন্দবাটি গ্রামে। ২০০৪ সালে এসএসসি পরীক্ষায় অকৃতকার্য হওয়ার পর পড়াশোনা ছেড়ে দেন। এরপর বড় ভাই হারুনুর রশিদ বাড়িতে বসে না থেকে আমবাগান ইজারা নিয়ে কাজ করার পরামর্শ দেন। বরেন্দ্র এলাকা হিসেবে খ্যাত সাপাহারে তিনি মিশ্র ফলের বাগান করে সফলতা পেয়েছেন।
সাপাহারের ফুটকইল গ্রামে ২০১৮ সালে বছরে প্রতি বিঘা জমি ৩০ হাজার টাকা চুক্তিতে ১২ বছরের জন্য ৯৬ বিঘা জমি ইজারা নেন। ওই বছরেই জমিতে আম্রপালি, আশ্বিনা, বারি-৪ ও গৌড়মতি জাতসহ বিভিন্ন প্রজাতির ১২ হাজার ৮০০টি আমের গাছ লাগান। গত বছর ফেব্রুয়ারি মাসের দিকে সেই বাগান পরিদর্শনে যান সাপাহার উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মজিবর রহমান।
তিনি আম গাছের সারির ফাঁকা জায়গাগুলোতে বরই গাছ লাগানোর পরামর্শ দেন। তার পরামর্শে চুয়াডাঙ্গা জেলার জীবননগর ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে বরই গাছের চারা সংগ্রহ করেন সাখাওয়াত। গত বছরের মে মাসে ফাঁকা জায়গায় বল সুন্দরী, কাশ্মেরী আপেল, বেবি কুল, সেডলেস ও থাইকুল জাতের ১১ হাজার ৭০০টি বরই গাছের চারা রোপণ করেন।
চারা লাগানোর ৮ মাসের মাথায় ডিসেম্বর মাসে গাছগুলোতে ফুল আসে। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে ফল পরিপক্ব হয়। ডালে থোকায় থোকায় ধরে আছে বরই। বরইগাছগুলো ফলের ভারে নুয়ে পড়েছে। বাগানে ১০ থেকে ১২ জন শ্রমিক বিভিন্ন দলে ভাগ হয়ে পাকা বরই সংগ্রহ করেন।
বাগানেই তা কিনতে আসেন রাজশাহী ও পাবনার ব্যবসায়ীরা। জাতভেদে প্রতি মণ বরই পাইকারি বিক্রি হয় ২ হাজার থেকে ২ হাজার ২০০ টাকায়। ৯৬ বিঘা জমিতে বরই চাষ করতে খরচ হয়েছে প্রায় ১৫ লাখ টাকা।
গত বছর আমের মৌসুমে মিশ্র ফলের বাগান থেকে ২৫ লাখ টাকার আম বিক্রি করেছিলেন। এ বছর আমের মুকুল আসার পরপরই সম্ভাব্য ফলন ধরে নিয়ে ব্যবসায়ীদের কাছে ৪১ লাখ টাকায় বিক্রির চুক্তি করেছেন। এ পর্যন্ত প্রায় ১৭ লাখ টাকার বরই বিক্রি করা হয়েছে। বাজারে ভালো দাম ও আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে আরও অন্তত ৯০ লাখ টাকা পাবেন বলে আশাবাদী সাখাওয়াত।
মিশ্র ফল বাগান করে সাখাওয়াত এলাকার অন্যান্য কৃষকদের তাক লাগিয়ে দিয়েছেন। এই বাগান দেখতে এবং মিশ্র ফল বাগান গড়ে তোলার পরামর্শ নিতে আসছেন স্থানীয়রা।
কৃষক সাখাওয়াত হাবিব বলেন, ২০০৭ সালে নিজের একটি মোটরসাইকেল ও মায়ের দেয়া একটি গাভি বিক্রি করে ১ লাখ ১০ হাজার টাকায় পত্নীতলার নির্মইল এলাকায় এক ব্যক্তির কাছ থেকে ১২ বিঘার আমের বাগান তিন বছরের জন্য ইজারা নেন। ওই বাগান পরিচর্যা করে পরের বছরই আম বিক্রি করেন ৪ লাখ টাকার।
লাভের টাকা খরচ না করে ১২ হাজার টাকা চুক্তিতে ১২ বছরের জন্য আরও ২০ বিঘা জমি ইজারা নেন। সেখানেও আমের বাগান করা হয়। এরপর প্রতিবছর পুঁজি বাড়তে থাকলে জমির পরিমাণও বাড়ানো হয়। ৯৬ বিঘার ওই মিশ্র ফল বাগান ছাড়াও সাপাহার ও পত্নীতলা উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় বর্তমানে তার ৩৫০ বিঘার আম বাগান রয়েছে। এসব বাগানে প্রায় তিন কোটি টাকা বিনিয়োগ করা হয়েছে।
সাখাওয়াত বলেন, অন্যান্য ফসলের তুলনায় মিশ্র চাষ অধিক লাভজনক। মিশ্র বাগানে তেমন কোনো পরিচর্যা করতে হয় না। প্রথমে গাছ লাগানো এবং জমি তৈরির পর কীটনাশক ও সামান্য পরিচর্যা ছাড়া কঠিন কোনো পরিচর্যা করতে হয় না।
চাকরির পেছনে না ছুটে শিক্ষিত বেকার যুবকরা যদি নিজে কিছু করার উদ্যোগ নেয় তাহলে সফল হবে। পৈত্রিকসূত্রে ছয় বিঘা জমি পেয়েছিলাম। বাগান করে সফলতা পাওয়ায় বর্তমানে নিজের মালিকানায় আছে ৫০ বিঘা কৃষিজমি। সাপাহার উপজেলা সদরে জায়গা কিনে চারতলা ভবন করেছি। সেখানেই পরিবার নিয়ে থাকা হয়।
বাগানে কাজের শ্রমিক সাইদ উদ্দিন ও সুজন বলেন, জমির বেড তৈরি, পানি সেচ ও পরিচর্চা এবং বরই ভাঙ্গা সহ সব ধরনের কাজ বছরজুড়ে থাকে। এজন্য অন্য কোথাও যাওয়ার দরকার হয় না। এ বাগানে কাজ করে সংসার চলছে।
ফল বিক্রেতা হারুন-অর রশীদ বলেন, সাপাহার ও পোরশার মধ্যে এটিই সবচেয়ে বড় মিশ্র ফলের বাগান। গত দুই বছর থেকে এ বাগান থেকে ফল সংগ্রহ করছি। এখান থেকে ফল সংগ্রহ করে ঢাকা, নওগাঁ, রাজশাহী, জয়পুরহাট পাবনা ও নাটোরসহ বিভিন্ন জেলায় পাইকারি বিক্রি করি। এই মৌসুমে বরই প্রতিমন ২ হাজার থেকে ২ হাজার ৪০০ টাকায় কিনছি।
সাপাহার উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মজিবর রহমান বলেন, বরেন্দ্র এলাকা হিসেবে খ্যাত জেলার সাপাহার, পোরশা ও পত্নীতলা উপজেলার আংশিক এলাকা। পানি স্বল্পতার কারণে এসব এলাকার কৃষকরা ধান চাষ ছেড়ে ফলের বাগানের দিকে ঝুঁকছেন।
আমের পাশাপাশি প্রতিবছরই উপজেলায় বরইয়ের চাষ বাড়ছে। সাখাওয়াতের সফলতা দেখে অনেকে অনুপ্রাণিত হয়েছে। কৃষক সাখাওয়াতের মতো মিশ্র ফল বাগান গড়ে তোলার জন্য আমাদের কাছে পরামর্শ নিতে আসছেন। আমের পাশাপাশি প্রতি বছরই উপজেলায় বরই চাষ বাড়ছে। বর্তমানে উপজেলায় বরই চাষ হওয়া জমির পরিমাণ প্রায় ৪০ হেক্টর।
comment5, purchase bactrim, tjj, buy baycip online, 59559, order benicar, :), price benzac, =], sale betapace, =]], sale betnovate, %-D, price betoptic, 083, discount biaxin, ibp, purchase bimat, %-))), sale brahmi, 865718, buy bupron sr online, 766885, cheap buspar, >:)), sale bystolic, skddj, buy cabgolin uk, :((, sale caduet, >:-DD, cheap calan, =]], cheap cardizem er, 8DDD, purchase cardizem, 959,
Hey There. I found your blog using msn. This is a really well written article.
I’ll make sure to bookmark it and return to read more of your useful information. Thanks for
the post. I’ll certainly return.
Look at my blog post: answer (blip.fm)
Hi there are using WordPress for your blog platform?
I’m new to the blog world but I’m trying to get started and set up my own. Do you need any coding expertise to make your own blog?
Any help would be really appreciated!
I don’t commonly comment but I gotta state thank you for the post
on this amazing one :D.
Here is my blog post :: unwanted cars
Yes! Finally something about 온라인 카지노 사이트.
We stumbled over here from a different web page and thought I should
check things out. I like what I see so now i am following you.
Look forward to exploring your web page for a second time.
Comments are closed.