রেন্ট-এ-কার ব্যবসায়ী মো. আলালের কাছ থেকে গত বছরের অক্টোবরে ১০টি গাড়ি ভাড়া নেন ব্যবসায়ী কাজী মো. ইসমাইল। ঠিকমতো ভাড়া না দেয়ায় গাড়িগুলো ফেরত চান আলাল। তবে গাড়ি ফেরত দিতে এবং ভাড়া পরিশোধে টালবাহানা শুরু করেন তিনি। বাধ্য হয়ে ইসমাইলের বিরুদ্ধে রাজধানীর খিলক্ষেত থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন আলাল। বহু কষ্টে ইসমাইলের কাছ থেকে নয়টি গাড়ি ফেরত পান তিনি। তবে টয়োটা-এক্স করোলা মডেলের একটি গাড়ি আর ফেরত পাননি। এরমধ্যে লাপাত্তা হয়ে যান ইসমাইলও। ফলে গাড়িটির আশা অনেকটা ছেড়েই দেন আলাল।
কিন্তু ওই বছরের ১০ ডিসেম্বর গাড়ি বিক্রিতে প্রতারণার অভিযোগে আদালতে মামলা করা হয় আলালেরই নামে। বাদী জসিম উদ্দিন মজুমদার নামে এক ব্যক্তি। তার অভিযোগ, ভুয়া কাগজপত্র দেখিয়ে পরস্পর যোগসাজশে গাড়ি বিক্রির প্রতারণা করেছেন কাজী মো. ইসমাইল ও মো. আলাল।
বাদী জসিম উদ্দিন মামলার এজাহারে উল্লেখ করেন, ২০২০ সালের ১৬ নভেম্বর টয়োটা-এক্স করোলা (ঢাকা মেট্রো গ-৩১-০৬৮৮) গাড়িটি কাজী মো. ইসমাইলের কাছ থেকে সাড়ে ১০ লাখ টাকায় কেনেন তিনি। গাড়ির সঙ্গে কাগজপত্রও বুঝিয়ে দেন ইসমাইল। তবে মালিকানা পরিবর্তন করতে গিয়ে বাধে বিপত্তি। বিআরটিএ কর্তৃপক্ষ (মিরপুর) গাড়ির ক্রেতা জসিমকে জানায়, ইসমাইল গাড়িটির মালিক নন। এর মূল মালিক মো. আলাল নামে এক ব্যক্তি। যদি মালিক আলাল সশরীরে বিআরটিএ অফিসে এসে কাগজপত্রে স্বাক্ষর করেন, তবেই মালিকানা পরিবর্তন সম্ভব। জসিম উদ্দিন বিষয়টি ইসমাইলকে জানালে তিনি এ নিয়ে তার সঙ্গেও টালবাহানা শুরু করেন। একপর্যায়ে নিজের মোবাইল নম্বরও বন্ধ করে দেন ইসমাইল।
এদিকে ক্রেতা জসিম উদ্দিনের মামলার পর পাল্টা মামলা করেন গাড়ির মূল মালিক মো. আলাল। গাড়ি ভাড়া নিয়ে ফেরত না দেয়া এবং গাড়ি চুরির অভিযোগ এনে করা ওই মামলায় আলাল আসামি করেন ইসমাইল ও জসিম উদ্দিনকে।
দু’পক্ষের মামলার কাগজ ও গাড়ি ক্রয়-বিক্রয় চুক্তিনামা, হলফনামা, মালিকানা পরিবর্তন করার কাগজ ও খিলক্ষেত থানায় সাধারণ ডায়েরির (জিডি) কপিসহ বেশ কিছু নথি সাংবাদিকদের হাতে এসেছে। নথিগুলো বিশ্লেষণ করে গাড়ি ভাড়া নিয়ে বেচে দেয়ার এ ঘটনাটি জানা গেছে।
আদালত দু’টি মামলার তদন্তের দায়িত্ব দিয়েছেন পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই)। পিবিআইয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, ভাড়া নিয়ে গাড়ি বিক্রির অভিযোগের মামলা তদন্ত শেষে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয়া হয়েছে। এতে কাজী মো. ইসমাইলকে আসামি করা হয়। আর মামলায় আলালের কোনো সম্পৃক্ততা না পাওয়ায় তাকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।
মামলার নথি ও জিডির তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, রেন্ট-এ-কার ব্যবসায়ী আলালের কাছ থেকে মাসিক ভাড়ায় প্রথমে দু’টি গাড়ি নেন ইসমাইল। ভাড়া চুক্তি হয় ৬০ হাজার টাকা। কিছুদিন পর আলালের কাছে ইসমাইল আরও আটটি গাড়ি চান। সে অনুযায়ী আলাল তাকে গাড়িগুলো দেন। তবে মাস পার হলেও গাড়ির ভাড়া দিতে টালবাহানা শুরু করেন ইসমাইল।
গাড়ি ফেরত চাইলে উল্টো মালিক আলালকেই ভয়ভীতি দেখান তিনি। এর মধ্যে টয়োটা-এক্স করোলা (ঢাকা মেট্রো গ-৩১-০৬৮৮) গাড়িটি বিক্রি করে দেন ইসমাইল। এজন্য ইসমাইল একটি ভুয়া চুক্তিনামাও তৈরি করেন। চুক্তিপত্রে ইসমাইল উল্লেখ করেন, ২০২০ সালের ১৫ অক্টোবর মো. আলাল সাড়ে নয় লাখ টাকায় গাড়িটি তার কাছে বিক্রি করেছেন।
ভুয়া চুক্তিপত্র ও গাড়ির কাগজপত্র ইসমাইলের নামে দেখে বিশ্বাস করে সাড়ে ১০ লাখ টাকায় গাড়িটি কিনে নেন জসিম উদ্দিন। তবে বিআরটিএ অফিসে গিয়ে জসিম জানতে পারেন—ইসমাইল তার সঙ্গে প্রতারণা করেছেন। অন্যের নামে থাকা গাড়ি নিজের নামে ভুয়া কাগজপত্র বানিয়ে বিক্রি করেছেন জসিমের কাছে। ফলে মালিকানা পরিবর্তন সম্ভব নয়।
জানতে চাইলে গাড়িটির মূল মালিক মো. আলাল বলেন, ‘আমার সঙ্গে কাজী মো. ইসমাইলের পরিচয় অন্য আরেকজনের মাধ্যমে। তিনি (ইসমাইল) ব্যবসার কথা বলে আমার কাছ থেকে প্রথমে দু’টি, পরে আরও আটটি গাড়ি নেন। চুক্তি অনুযায়ী গাড়ি ফেরত দিতে এবং ভাড়া পরিশোধে টালবাহানা করেন ইসমাইল। থানায় জিডি করার পর তিনি আমার নয়টি গাড়ি ফেরত দেন। তবে আরেকটি প্রাইভেটকারের খোঁজ মিলছিল না। পরে জানতে পারি—ওই গাড়িটি ভুয়া কাগজপত্র করে জসিম নামে এক ব্যক্তির কাছে ইসমাইল বিক্রি করেছেন।’
আলাল বলেন, ‘ইসমাইলের কাছে গাড়ি বিক্রি তো দূরের কথা, গাড়িগুলো থেকে ঠিকমতো চুক্তিভিত্তিক ভাড়াও পাইনি। ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করে গাড়িটি বিক্রি করেছেন তিনি। তার সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও মোবাইল নম্বর বন্ধ পেয়েছি। সশরীরেও তাকে খুঁজে পাইনি।’
ইসমাইলের সঙ্গে যোগসাজশে গাড়ি বিক্রির সঙ্গে জড়িত ছিলেন কি-না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমার গাড়িটি যিনি কিনেছেন, তাকে আমি আগে থেকে চিনতামই না। আর গাড়িগুলো ইসমাইলের কাছে বিক্রির জন্য নয়, ভাড়ার জন্য দেয়া হয়। কিন্তু ইসমাইল আমাকে না জানিয়েই গাড়িটি জসিমের কাছে বিক্রি করে দেন। কাগজপত্রও জাল করে বানান।’
গাড়ির ক্রেতা ভুক্তভোগী জসিম উদ্দিন মজুমদার বলেন, ‘আমি সাড়ে ১০ লাখ টাকায় গাড়িটি কিনেছি। কেনার সময় ইসমাইল গাড়ির মূল কাগজপত্র ও স্ট্যাম্পে লিখিত দেয়ার কারণে আমি তাকে বিশ্বাস করেছি। বুঝতেও পারিনি গাড়িটি তার নয়। গাড়ি কেনার পর নাম পরিবর্তনের জন্য বললে তিনি বিভিন্ন টালবাহানা করতে থাকেন। সন্দেহ হওয়ায় আমি বিআরটিএ অফিসে গিয়ে জানতে পারি গাড়ির মালিক ইসমাইল নন, মো. আলাল। আমি আলালকে চিনিও না, তার সঙ্গে কখনো কথাও হয়নি।’
তিনি বলেন, ‘অনেক কষ্টে গাড়ির মূল মালিক আলালকে খুঁজে পেলেও নাম পরিবর্তনের জন্য আলাল উল্টো আমার কাছে দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। এমনকি চড়-থাপ্পড় দিয়ে আমার নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করার হুমকিও দেন তিনি। এরপর আমি নিরুপায় হয়ে আদালতে ইসমাইল ও আলালের নামে মামলা করি।’
ভুক্তভোগী জসিমের দাবি, ইসমাইল ও আলালের মধ্যে কোনো যোগসূত্র রয়েছে। তারা দু’জন একজোট হয়ে তার সঙ্গে প্রতারণা করেছেন। গাড়ি বিক্রির পেছনে আলালেরও ইন্ধন রয়েছে।
তবে জসিমের কাছে দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবি, তাকে চড়-থাপ্পড় দেয়া এবং ইসমাইলের সঙ্গে যোগসাজশের অভিযোগ নাকচ করে দিয়েছেন আলাল। তিনি বলেন, ‘গাড়ি কেনা জসিমের সঙ্গে আমার কখনো দেখাই হয়নি। তাকে চড়-থাপ্পড় মারা বা ইসমাইলের সঙ্গে যোগসাজশ করার প্রশ্নই ওঠে না। আমি নিজের গাড়ি ফেরত চাই। এজন্য বিচার পেতে আদালতে মামলা করেছি।’
তবে জাল কাগজ তৈরি করে ভাড়া করা গাড়ির বিক্রেতা কাজী মো. ইসমাইলের মোবাইল নম্বরে একাধিকবার কল করা হলেও সেটি বন্ধ পাওয়া যায়। তার উল্লিখিত অফিসের ঠিকানায় গিয়েও সেটি তালাবদ্ধ পাওয়া গেছে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআইয়ের পরিদর্শক মো. কামাল বলেন, ‘ভাড়া নিয়ে গাড়ি বিক্রির অভিযোগের মামলায় কাজী মো. ইসমাইলের বিরুদ্ধে তদন্ত শেষে আদালতে চার্জশিট জমা দেয়া হয়েছে। তদন্তে আসামি আলালের কোনো সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়নি। তিনি এ ঘটনায় পরিস্থিতির শিকার।’
তিনি বলেন, ‘ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করে গাড়ি বিক্রেতা কাজী ইসমাইল একজন প্রতারক। মামলার তদন্ত করতে গিয়ে দেখা গেছে, ইসমাইলের জাতীয় পরিচয়পত্রের ঠিকানাও ভুয়া। পরে পিবিআই তার আসল ঠিকানা খুঁজে বের করে ওই ঠিকানা যুক্ত করে চার্জশিট তৈরি করেছে।’
continuously i used to read smaller posts which
also clear their motive, and that is also happening with this
article which I am reading at this place.
Wonderful beat ! I wish to apprentice whilst you amend your
web site, how can i subscribe for a weblog website? The account helped me a appropriate
deal. I have been tiny bit acquainted of this your broadcast offered vibrant transparent concept
Amazing things here. I’m very happy to look your article.
Thank you so much and I’m taking a look forward
to contact you. Will you kindly drop me a e-mail?
We’re a group of volunteers and opening a new scheme in our community.
Your site offered us with valuable information to work on. You have done an impressive job and our
entire community will be grateful to you.
hello there and thank you for your information – I have certainly picked up anything new from right here.
I did however expertise some technical points using this website, as I experienced
to reload the site many times previous to I
could get it to load correctly. I had been wondering if your hosting is OK?
Not that I am complaining, but sluggish loading instances times will very frequently
affect your placement in google and could damage your high quality score if advertising and marketing with Adwords.
Well I’m adding this RSS to my e-mail and could look out
for a lot more of your respective interesting content.
Ensure that you update this again very soon.
I have read so many articles concerning the blogger lovers but
this article is actually a good piece of writing, keep it up.
What’s up to every body, it’s my first go to see of this blog; this web site consists of awesome and truly excellent stuff in favor of readers.
Comments are closed.